OrdinaryITPostAd

আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা

খুবই পরিচিত একটি ফল আনারস। তবে আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক তথ্য জানা নাই।  আনারস যেমন নানা ধরনের পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ।তেমনি এর কিছু অপকারিতা ও রয়েছে।


আজকে আর্টিকেলটি তে আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং আরো অন্যান্য অজানা কিছু তথ্য তুলে ধরেছি। যেটা আপনাদের জন্য অনেক হেল্পফুল হবে তাই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটি দিকই রয়েছে । বাণিজ্যিক ফল হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে আনারস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আমাদের দেশের খুব জনপ্রিয় একটি ফল আনারস ।আনারস একটি স্বাস্থ্যকর ফল এর পুষ্টিগুণ এবং উপকারী দিক অনেক রয়েছে।

অপরদিকে এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে । নিচে আনারসের সকল উপকারী এবং অপকারি দিক গুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

আনারস এর উপকারিতা ও অপকারিতা

আনারস ভিটামিন সি, ম্যাঙ্গানিজ এবং হজমকারী এনজাইম এর মত পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য-উন্নয়নকারী উপাদানে সমৃদ্ধ। যা আমাদের শরীরের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ ফলের জুড়ি নেই। আবার অপরদিকে অনেক বেশি আনারস খাওয়ার ফলে অম্বল এবং বমি বমি ভাবের মত আরো অনেকগুলি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

আনারস এর উপকারিতা যেমনঃ

আনারসের প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও এতে থাকা ম্যাঙ্গানিজ হাড় কে করে তুলে মজবুত তাই খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

কৃমি নাশক হিসেবেও আনারস ভালো কাজ করে। কৃমির উৎপাত বন্ধ করতে সকাল বেলা খালি পেটে আনারস খাওয়া উচিত

আনারস এ প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম থাকায় দাতের সুরক্ষায় অনেক ভালো কাজ করে। তাই নিয়মিত আনারস খেলে দাঁতের জীবাণু ও সংক্রমণ কম হয় ফলে দাঁত ঠিক থাকে এছাড়াও মাড়ির যেকোনো সমস্যা সমাধান করতে আনারস বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

আনারসে ভিটামিন সি থাকায় ভাইরাস জনিত ঠান্ডা ও কাশি প্রতিরোধ করে থাকে। জ্বর ও জন্ডিস গলা ব্যথা নাক দিয়ে পানি পড়া এ সকল রোগ প্রতিরোধে আনারস অনেক উপকারী।

আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং বদ হজম বা নরেন্দ্র যে কোন সংস্থা থেকে মুক্তি পেতে আনারস খাওয়া যেতে পারে

আনারস দেহের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থি গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে অর্থাৎ থাইরয়েড গ্রন্থির স্ফীত হওয়া প্রতিরোধ করে।

আনারস এর অপকারিতা যেমনঃ

আনারস খাওয়ার ফলে এলার্জি সমস্যা হয়ে থাকে। এটি মাংসপেশী ছাড়াও ত্বকে লাল বা তরল বিচ্ছিন্নতা এবং ঘাম হাঁচি এ সমস্ত উপসর্গ দেখা দেয়, তাই আনারস খাওয়ার আগে তা কেটে লবন পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া উচিত এতে করে কোন সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

আনারস খাওয়ার ফলে বাতের ব্যথা শুরু হতে পারে। তাই যে সকল মানুষের বাতের ব্যথা আছে তাদের আনারস না খাওয়ায় ভালো।

আনারস রয়েছে অনেক পরিমাণ প্রাকৃতিক চিনি। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের আনারস না খাওয়াই ভালো কারণ আনারসে থাকা দুইটি চিনি উপাদান যেমন সুক্রোজ এবং ফ্রক্টজ রয়েছে ডায়াবেটিক্স রোগীদের জন্য অনেক ক্ষতিকর

জ্বরে আনারসের উপকারিতা

ঋতু পরিবর্তনের ফলে সকল বয়সের মানুষ ঠান্ডা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। আর জ্বর এলেই ওষুধ খেয়ে থাকেন অনেকে। তবে জ্বর হলে ওষুধ না খেয়েও এমন অনেক খাবার আছে যা খেলে জ্বর এমনিতে সেরে যায় তাই জ্বর ভালো হওয়ার জন্য আনারস খুবই উপকারী।

আনারসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকার কারণে জ্বর সর্দি কাশি গলা ব্যথা মাথা ব্যথা ও ভাইরাস জনিত জ্বর জন্ডিস এ সমস্ত রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত কঠোর ভূমিকা পালন করে। তবে জ্বর যদি তিন দিনের অধিক থাকে তাহলে অবশ্যই ডক্টরের পরামর্শ নিতে হবে।

রাতে আনারস খেলে কি হয়

এই ফল আমাদের শরীরের নানা কাজে লাগে তবে এটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ হওয়ায় তা রাতের বেলা এড়িয়ে চলায় উচিত। পেট ফাঁপা সহ নানা সমস্যার কারণ হতে পারে এমনকি দেখা দিতে পারে বদহজম।

গর্ভাবস্থায় আনারস খেলে কি হয়

আনারস খেতে অনেকেই পছন্দ করে এই ফাল্গুনের মধ্যে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। তবে এই ফলটি থেকে গর্ভবতী নারীকে একটু দূরে থাকতেই বলা হয় কারণ আনারসের মধ্যে রয়েছে উচ্চমাত্রায় ব্রোমেলেইণ। এই এনজাইম টি জরায়ুর সংকোচনকে উদ্দীপ্ত করে এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আগে সন্তান জন্ম হতে পারে।

যেটি মা ও শিশুর উভয়ের জন্যই অনেক ক্ষতিকারক। এছাড়াও ব্রোমেলেইন গর্ভপাত ঘটাতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় আনারস না খাওয়ায় ভালো।

ত্বকের যত্নে আনারস

আনারসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা আমাদের শক্তি যোগান দেয় । আর এতে থাকা প্রোটিন যা ত্বকের মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বক কুচকে যাওয়া থেকে বাঁচায় এছাড়াও তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ নানা ধরনের কাজ করে থাকে।

আনারস খেলে পিরিয়ড সমস্যা দূর হয়

যাদের অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য আনারস বেশ উপকারী ফল আনারস খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হয়। চিটা গুড় বা লাল গুড় মিশিয়ে খেলে পিরিয়ড নিয়মিত হবে এবং দেহে লৌহ ও জিংকের পরিমাণ পরিমিত থাকে।

আনারস রক্ত পাতলা করে

আনারসে ব্রোমেলেইণ নামে এক ধরনের এনজাইম থাকে যা এমনিতে শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। কিন্তু শরীরে যদি ব্রোমেলেইনের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি হয় তাহলে সমস্যা দেখা দেয় । তাই এ ধরনের সমস্যার কারণে রক্ত পাতলা হয়ে যায় এবং রক্তপাতের আশঙ্কাও থাকে।

চোখের যত্নে আনারস উপকারিতা

চোখের রেটিনা নষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাওয়া রোগ '' ম‍্যাকুলার ডিগ্রেডেশন'' এই রোগটি হওয়া থেকে আমাদের রক্ষা করে আনারস। আনারস রয়েছে বেটা ক্যারোটিন। তাই প্রতিদিন আনারস খেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভব না ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমে ফলে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ।

আনারসের জুসের উপকারিতা

আনারসের জুস প্রাকৃতিকভাবে পুষ্টিকর উপাদান গুলির সম্পূর্ণ সেট সরবরাহ করে।, এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ , ভিটামিন বি৬ , ফলিক অ্যাসিড , ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান সরবরাহ করে যা শরীরের সঠিক পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উন্নতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

আনারস খাওয়ার সঠিক সময়

সকালে খালি পেটে এক গ্লাস পানি এবং আনারস ফল বা আনারসের জুস খাওয়া ভালো। কারণ সকালে আমাদের বেশি হয়। এই সময়ে আমাদের পাচনতন্ত্র দ্রুত শর্করা ভেঙে দেয় যা আমাদের শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকুলের দ্রুত পোষণ করতে সাহায্য করে। এটি এন্টি অক্সিডেন্ট বিভিন্ন সংক্রমণ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে তাই আনারস ফলকে শক্তির পাওয়ার হাউস বলা যায়।

আনারস ও দুধ একসাথে খেলে কি হয়

দুধকে আদর্শ খাবার বলা হয় এতে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান যেমন প্রোটিন , চর্বি কার্বোহাইড্রেট। আর অন্যদিকে আনারস ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এটি ক্যালসিয়াম পটাশিয়াম এবং ফসফরাসের বড় উৎস । অনেকেরই ধারণা দুধ ও আনারস একসাথে খেলে মানুষ মারা যায় এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ।

সাধারণত আনারস বা দুধ একসাথে খেলে বদহজম বা পেট খারাপ হতে পারে। কারণ আনারসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে এর কারণে এসিডিটি সমস্যা হয় আর অন্যদিকে দুধে ল্যাক্টোজেন নামক উপাদান থাকে এই কারণে অনেকের পেটে সহ্য হয় না । তাই হয়তো অল্প সমস্যা দেখা দিতে পারে কিন্তু দুধ ও আনারস খেলে মানুষ মারা যায় না এটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ভুল ধারণা।

লেখক এর মন্তব্য

আনারস এর উপকারিতা যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি আনারসের অপকারিতা ও রয়েছে আনারসের উপকারি দিকগুলো শরীরের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তো আশা করি আনারসের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

আমার আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এক্সক্লসিভ এ এস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১