কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
ঔষধি গুন সম্পূর্ণ কালোজিরায় রয়েছে দারুণ সব উপকারিতা। কালোজিরার ইংরেজি নাম (Blackseed or black caraway) শরীরে বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কালোজিরার মত এত কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান আর নেই। পুষ্টিমান ও ওষুধি গুণাগুণ সহ কালোজিরা বহু গুনে গুণান্বিত।
কালোজিরার ঔষধি গুনাগুন, উপকারিতা এবং এর ব্যবহার এর নিয়ম সম্পর্কে , সঠিক তথ্য জানতে হলে আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।
ভূমিকা:
কালোজিরা হল এর সাধারণ নাম এটি কালো কেওড়া, রোমান ধনে , মৌরিফুল, ইত্যাদি নামেও পরিচিত। বহু যুগ ধরে কালোজিরা মানব দেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন বি ২,অলিক এসিড, আয়রন , ক্যালসিয়াম, জিংক। কালোজিরা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
কালোজিরার ঔষধি গুণ
কালোজিরা অর্গানিক আয়ুর্বেদিক ভেষজ উদ্ভিদ, কালোজিরার ঔষধি গুন যথেষ্ট উপকারী। কালোজিরা জ্বর সর্দি কাশি গলা ব্যথা পেট ব্যথা শরীর ঝিমঝিম দাঁত ব্যথা ইত্যাদি ছাড়াও জটিল কঠিন রোগ সারাতে ও কার্যকরী ভূমিকা রাখে ।
যেমনঃ
- ডায়াবেটিক্স জন্য কালোজিরার ব্যবহার কালোজিরা ও ডালিমের খোসার মিশ্রণ এবং কালোজিরার ডায়াবেটিক্স এর জন্য উপকারী
- হার্টের সমস্যায় কালোজিরাঃ কালোজিরার তেল হার্টের রোগীদের জন্য অনেক উপকারী, এক চা চামচ কালোজিরা তেল এবং এক কাপ দুধ প্রতিদিন দুইবার করে খেতে থাকলে হার্টের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
- পেটের সমস্যায় কালোজিরাঃ পেটের সমস্যার জন্য কালোজিরা কে ভেজে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এক বা দুই চামচ কালোজিরা গুঁড়ো নিয়ে আধা কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে খেতে পারলে পেটের সমস্যা দূর হবে ।
- কালোজিরা ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃজ কালোজিরা প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে এটি রেডিক্যালকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যার ফলে ক্যান্সারের মতো রোগের লড়াই করতে পারে। এটি কয়েকটি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যেমন জরায়ু , ফুসফুস , ত্বক এ সকল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকেন ।
প্রতিদিন কালোজিরা কতটুকু খাওয়া যাবে
প্রতিদিন এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা দিনে দুইবার খাওয়া যাবে।
হাদিসে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম ও বর্ণনা
কালোজিরা বীজ থেকে এক ধরনের তেল তৈরি হয় যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে রয়েছে আয়রন , ফসফেট, এবং ফসফরাস, তাই কালোজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে, রাসুল (সাঃ) কালোজিরার বিষয়ে অনেক প্রশংসা করেছেন তিনি বলেছেন এটি মৃত্যু ব্যতীত সব রোগের মহা ঔষধ (বুখারি হাদিস,৫৬৮৭)।
রান্নায় কালো জিরার ব্যবহার
রান্নায় কালোজিরা কে আমরা পাঁচফোড়ন হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। যে কোন রান্নায় কালোজিরারফোড়ন দিলেই সে রান্নার পুষ্টিগুণ অনেকটাই বেড়ে যায়।
ত্বকের যত্নে কালোজিরার ব্যবহার
পরিমাণ মত মধু ও কালোজিরা নিয়ে এই দুইটিকে একত্রে পেস্ট বানিয়ে হবে এতে ত্বক উজ্জ্বল হবে। আর যদি ব্রণের সমস্যা থাকে তাহলে ভিনেগারের সাথে কালোজিরা মিশিয়ে পেস্ট করে নিন তারপর ,যে স্থানে ব্রণ আছে ঠিক ওইখানে কিছুক্ষণ লাগিয়ে রেখে দিন এটা নিয়মিত লাগালে ব্রণ দূর হবে।
কালোজিরা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
কালোজিরা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কালোজিরাতে যে সকল উপাদান রয়েছে তা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী ।তাই কালোজিরা ভেজে গুঁড়ো করে বা কাঁচা কালোজিরা চিবিয়ে ভর্তা কোরে যে যেভাবেই হোক না কেন কালোজিরা খেলেই এর গুনাগুন পাওয়া যাবে এর মাধ্যমে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
শিশুর দৈহিক বৃদ্ধিতে কালোজিরার ব্যবহার
দুই বছরের অধিক বয়সের শিশুদের কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করলে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি করে ঘটে । কিন্তু এই বয়সের বাচ্চাদের কালোজিরা তেল সেবন করা যাবে না। এর তেল শুধু তাদের বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য উপযোগী।
দীর্ঘদিন কালোজিরা খেলে কি হয়
কালোজিরা খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তচাপ কমিয়ে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতে পারে কালোজিরার সতর্কতা হল কালোজিরা নিয়মিত ও পরিমিত খেতে হবে।
লেখক এর মন্তব্য
কালোজিরার উপকারিতা এবং এর গুনাগুন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি , কালোজিরায় থাকা যে সকল উপাদান রয়েছে সেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী কিন্তু এর সঠিক ব্যবহার এবং নিয়ম জেনে ব্যবহার করতে হবে , এবং যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করতে হবে। আমার মতে কোন জিনিসই দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত নয় তবে।
আশা করি আমার আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করবেন আর বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন।
এক্সক্লসিভ এ এস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url