ডিমের উপকারিতা ও ডিম কিভাবে খেলে সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পাবেন জেনে নিন
ডিমকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয় ,একে বলা হয় সুপার ফুড। ডিমের মধ্যে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যামিনো এসিড এবং উচ্চ প্রোটিন ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে ।ডিম শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি অনেক সহজলভ্য ও পুষ্টিকর হওয়ায় আমাদের দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় থাকে।
ডিমের পুষ্টিকর দিক ও ডিমের সফল গুনাগুন জানতে হলে আমার আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি উপকৃত হবেন।
ভূমিকা
ডিম পুষ্টিগুণে ভরপুর। তাই কমবেশি সকলেরই প্রিয় খাবার ডিম ,তবে একেক জন একেক ভাবে খেয়ে থাকেন। কেউ হয়তো ভেজে খেতে পছন্দ করে ,আবার কেউ পোচ করে , আবার কেউ সেদ্ধ করে । সবার পছন্দই ভিন্ন ভিন্ন কিন্তু আসলে কিভাবে ডিম খেলে সম্পূর্ণ পুষ্টিগুন ও উপকারিতা পাওয়া যায় তা নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ডিমের পুষ্টিগুণ উপাদান কি কি
একটি ডিমের ওজন প্রায় ৫০ গ্রাম হয়ে থাকে। একটি ডিম থেকে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায় এতে অনেক ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে থাকে যেমন ভিটামিন ডি , ভিটামিন বি , জিঙ্ক , সোডিয়াম শর্করা পটাশিয়াম , ফোলেট ইত্যাদি এ সকল পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে।
ডিম কিভাবে খেলে উপকারিতা বেশি
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিম সিদ্ধ না হলে অমলেট বা পোচ আকারে খাওয়া হয় কিন্তু পুষ্টির দিক দিয়ে কোনটি এগিয়ে সেদ্ধ ডিম, নাকি তেলে ভাজা পোচ বা অমলেট ।
সেদ্ধ ডিমঃ একটি সেদ্ধ ডিমের মধ্যে ৭৮ ক্যালরি থাকে এবং প্রোটিন ফ্যাট এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন মিনারেল ও পাওয়া যায় । ডিম সেদ্ধ করে খেলে তার মধ্যে যেসব পুষ্টি রয়েছে তা অক্ষত থাকে।
ডিমের অমলেট বা পোচঃ ডিমের অমলেট বা পোচ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেল ব্যবহার করা হয় এতে ডিমের পুষ্টি উপাদান কমবে না কিন্তু অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট বেড়ে যাবে যেটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর । কিন্তু ডিম সেদ্ধ করে খেলে এসবের কোন ভয় নেই বরং ডিমের সমস্ত পুষ্টি পাবেন।
ডিম সেদ্ধ নাকি আধা সেদ্ধ
অনেকে মনে করেন , আধা সেদ্ধ ডিম খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এ ধারনা একেবারেই সঠিক নয় বরং পুরোপুরি সেদ্ধ ডিম খাওয়ায় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। কারণ আধা সেদ্ধ ডিমে থাকতে পারে সাল্মনেল্লা নামক এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। এর ফলে বমি , ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখাতে পারে তাই আধা সেদ্ধ ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ডিম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিমের ভূমিকা রয়েছে। ডিমের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।,আমরা জানি ডিম পুষ্টির উৎস তাইআমরা অসুস্থ হলেই ডিম খেয়ে থাকি, আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ডিমের জুড়ি নেই।
খালি পেটে ডিম খেলে কি হয়
সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সিদ্ধ ডিম খেলে শরীরের বিশাল পরিবর্তন আসে তার মধ্যে যেমন,
সকালে খালি পেটে ডিম খেলে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় সেই সঙ্গে চোখের রেটিনার কর্মক্ষমতা বাড়ায় ফলে ছানিসহ একাধিক চোখের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা গ্রাস পাই।
- খালি পেটে ডিম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ডিমে উপস্থিত সেলেনিয়াম দেহের রোগ
- প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে কোন ধরনের সংক্রমনে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
- খালি পেটে ডিম খেলে দেহের অ্যামাইনো এসিডের ঘাট দূর হয়। ডিমে এমাইনো এসিডের পরিমাণ প্রচুর যদি খালি পেটে ডিম খাওয়া হয় তাহলে এই এমাইনো এসিড ভালো হবে কাজ করতে পারে।
ডিম কিভাবে খেলে ওজন বাড়ে
প্রতিদিন তিন চারটি ডিমের সাদা অংশ খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি পাবে। তবে কোনভাবেইকাঁচা ডিম খাওয়া যাবে না, সেদ্ধ করা ডিমের সাদা অংশ খাওয়া উচিত নিয়মিত ডিম খেলে দুই মাসের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিদিন কয়টি ডিম খাওয়া যাবে
শরীর সুস্থ রাখতে ডিমের ভূমিকা অপরিসীম । তবে দিনে কয়টা ডিম খেতে পারবে সেটা নির্ভর করে তার শারীরিক অবস্থার ওপর যেমন একজন অসুস্থ মানুষ দিনে ও দুইটা খেতে পারবে কিন্তু একজন পুরোপুরি সুস্থ মানুষ প্রতিদিন একটা দিন খেতে পারবে।
মেয়েদের গর্ভাবস্থায় ডিমের ভূমিকা
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের সঠিক পুষ্টির খুবই প্রয়োজন। আর এই অবস্থায় পুষ্টি জোগাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে ডিম। শিশু জন্মের পরে মাকে সুস্থ রাখতে এবং মাতৃ দুগ্ধকে পুষ্টিতে পরিপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে ডিম ।
লেখক এর মাধ্যমে মন্তব্য
সম্মানিত পাঠকগণ আশা করি আমার সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে বুঝতে পেরেছেন ডিমের সকল উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। ডিমের পুষ্টি ও উপকারিতা অনেক রয়েছে কিন্তু যে কোন জিনিস পরিমিত খেলেই তার উপকারিতা পাওয়া যায়। আর যদি পরিমাণের থেকে বেশি খাওয়া হয় তাহলে তার প্রতিক্রিয়াও ঘটে তাই যে কোন জিনিস হোক না কেন পরিমাণ মতো খাওয়া উচিত।
আমার আর্টিকলটি পড়ে যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং কমেন্ট করে জানাবেন 'ধন্যবাদ'।
এক্সক্লসিভ এ এস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url