OrdinaryITPostAd

তাহাজ্জুদ নামাজ কি ও তার বিবরণ

তাহাজ্জুদ নামাজ মহান আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হওয়ার অন্যতম উপায়। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ছাড়াও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ। এই নামাজ মুসলিম জাতির জন্য সুন্নতে গায়রে মুয়াক্কাদা।

তাহাজ্জুদ নামাজ কি এবং তার সকল নিয়মাবলী জানতে আমার এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

ভূমিকা

তাহাজ্জুদ নামাজ আমাদের মুসলিম জাতির জন্য একটি শ্রেষ্ঠ নামাজ এ নামাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে থাকি ।কারণ এই নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয় । তাই তাহাজ্জুদ নামাজ কি ও তার বিবরণ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজ কি

তাহাজ্জুদ অর্থ- ঘুম থেকে জাগা ।এই নামাজ আরবিতে কিয়ামুল লাইল নামে পরিচিত। তাহাজত নামাজ বা রাতের নামাজ হচ্ছে একটি নফল ইবাদত, ফরজ নামাজের পর অন্যান্য সুন্নত বা নফল সব নামাজের মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য এটি একটি ঐচ্ছিক ইবাদত।

এটা বাধ্যতামূলক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ(সাঃ) নিয়মিত তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করতেন। তাই তিনি তার সাহাবীদের এটা পালনে উৎসাহিত করতেন।
এই নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের অন্তর্ভুক্ত না হলেও ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য তাহাজ্জুদ নামাজ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ এই নামাজে ডাকার জন্য কোন মুয়াজ্জিন নয় স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার প্রথম আসমানে নেমে আসেন। আর বলেন যে আমাকে ডাকবে তার ডাকে আমি সাড়া দেবো এবং তার সকল গুনাহ মাফ করে দিবো ।

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

ইশার নামাজ আদায়ের পর থেকে তাহাজ্জুদের সময় শুরু হয় এবং রাতের শেষ ভাগ পর্যন্ত সময় থাকে। তবে তাহাজ্জুদ আদায়ের সর্বোত্তম সময় হলো রাতের শেষ অংশ, অথবা ফজরের নিকটবর্তী যে সময়টাকে রাতে এক তৃতীয়াংশ যা তাহাজ্জুদের সঠিক সময়।

তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত

তাহাজ্জুদ নামাজ সর্বনিম্ন দুই রাকাত আর সর্বোচ্চ ১২ রাকাত এর থেকে বেশি পড়াও যাবে।

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন সূরা নেই, যে কোন সূরা দিয়েই এই নামাজ আদায় করা যাবে। তবে যদি বড়সুরা বা আয়াত মুখস্ত থাকে তাহলে সেগুলো পড়াই উত্তম কারণ তাহাজ্জুদ নামাজ যথাসম্ভব লম্বা কেরাত, লম্বা রুকু, ও সেজদা সহকারে পড়া।রাসুল (সাঃ) সব সময় বড় বড় সুরা দিয়েই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন।

তাই আমাদেরও বড়সুরা মুখস্ত করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উচিত, তবে মুখস্ত না থাকলে যে কোন সূরা দিয়েই নামাজ পড়া যাবে।এই নামাজের নিয়ম দুই রাকাত দুই রাকাত করে এই নামাজ আদায় করা। 

প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহা পড়ার পর, অন্য যে কোন সূরা মিলানো এবং প্রত্যেক দু'রাকাত শেষে তাশাহুদ ও দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাতে হবে এভাবে সম্পূর্ণ নামাজ শেষ করতে হবে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত আরবিতে বাংলা উচ্চারণ

নাওয়াইতুয়ান উছোয়াল্লিয়া লিল্লাহি তা'আলা রাকাতাই তাহাজ্জুদি সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবর।

তাহাজ্জুদ নামাজের বাংলায় নিয়ত

আমি আল্লাহর ওয়াস্তে কেবলার দিকে মুখ করে তাহাজ্জুদের দু রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত করলাম।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরেই শ্রেষ্ঠ নামাজ হল তাহাজ্জুদ

রাতের নামাজ তাহাজ্জুদ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে আল্লাহু তায়ালা এই নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন।মহানবি (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হল আল্লাহর মাছ মহরমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হল রাতের তাহাজ্জুদের নামাজ তাই তাহাজ্জুদকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরেই সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ বলা হয়েছে।

তাহাজ্জুদ নামাজে যে দোয়াটি পড়লে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিয়ান না লাকাল হামদু লা ইলাহা ইল্লা আনতা ওয়াদিকা লা শারিকা লাকাল মান্নান, ইয়া বাদিয়াস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্য ইয়া কাইয়ুম।


এই দোয়াটি পড়ে আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে মনের ইচ্ছা প্রকাশ করলে মহান আল্লাহ তা'আলা অতি দয়ালু ও ক্ষমাশীল তিনি সকল মনের ইচ্ছা পূরণ করবেন ইনশাল্লাহ।

তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব

তাহাজ্জুদ এমন এক নামাজ যা অন্তর আত্মা শক্তির সঞ্চয়ের শক্তিশালী মাধ্যম। প্রাণহীন হৃদয়কে সজীব করার এক শ্রেষ্ঠতম উপায়, আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়ার এক অনন্য মাধ্যম সালাতুত তাহাজ্জুদ এটা সবথেকে ফজিলতপূর্ণ নামাজ। এই নামাজ আদায়কারী কে আল্লাহ তা'আলা শ্রেষ্ঠ স্থানে বসাবেন ।


যেমন,
১। তাহাজ্জুদ আদায়কারী মুমিনদের এবাদুর রহমান বা রহমানের বান্দা বলা হয়েছে
২। তাহাজ্জুদ আদায়কারী বান্দারা কেয়ামতের দিন প্রশংসিত স্থানে অধিষ্ঠিত হবেন
৩। যারা তাহাজত আদায় করে তাদের আল্লাহ তা'আলা আনুগত্য বান্দা হিসেবে কুরআনে উল্লেখ করেছেন এবং তারা জ্ঞানের অধিকারী বলেছেন
৪। তাহাজ্জুদ নামাজ শরীর থেকে রোগ ব্যাধি দূর করে, বিশেষ করে অক্ষমতা হতে মুক্তি লাভ করে

লেখক এর মন্তব্য

তাহাজ্জুদ নামাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং ফজিলত পূর্ণ সালাত কম বেশি আমরা সবাই জানি তাহাজ্জুদ মুসলিম ধর্ম অনুসারীদের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের একটি অন্যতম মাধ্যম তাহাজ্জুদ নামাজ।

তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে আশা করি আপনারা সবাই বুঝতে পেরেছেন তাই আমার আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনারা উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন ''ধন্যবাদ''

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এক্সক্লসিভ এ এস এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১